SAIFUL MUNNA - Bangla Summary, Handnotes

Dirilis Ertugrul Bangla | আরতুগ্রুল সিরিজ রিভিউ.

Dirilis Ertugrul Review, artugrul series review, Dirilis Ertugrul Bangla, আরতুগ্রুল সিরিজ রিভিউ, saiful munna blog


Dirilis Ertugrul Bangla | আরতুগ্রুল সিরিজ রিভিউ.
Dirilis Ertugrul Series Review


আর্তুগ্রুল সিরিজ - পরিচিতি:

  • নাম: দিরিলিস আর্তুগ্রুল (এরতুরুল)
  • ধরণ: ঔতিহাসিক ড্রামা সিরিজ।
  • কাহিনী: তুর্কি জাতির রাষ্ট প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা আরতুগ্রুল গাজীর ইতিহাস ও কাল্পনিক বিভিন্ন ঘটনার মিশ্রণ।
  • পর্ব: ১৫০ (প্রতিটি পর্ব ২ ঘন্টা)
  • স্থান: যাযাবর তাবু, সেলজুক প্রাসাদ, আলেপ্পর প্রাসাদ, বাইজেন্টাইন সীমান্ত ইত্যাদি।
  • প্রধান চরিত্র: আরতুরুল, হালিমা সুলতানা, সুলেমান শাহ, হাইমে মা, গুন্দারু, সেলজান, বামসী, দোগান, তুরগুত, আব্দুর রহমান, আর্তুক বে আরও অনেকে।
  • প্রিয় চরিত্র: হাইমে মা, আর্তুক বে, ইবনে আরাবী।
  • ভিলেন: খিষ্টান টেম্পলার, বাইজেন্টাইন সৈন্য, মোঙ্গল বাহিনী, মুসলিম বিশ্বাসঘাতক।
  • প্রধান ভিলেন: বাইজি নয়ান (মোঙ্গল), দ্রাগোস (খ্রিষ্টান), আমির সাদেত্তিন কোপেক (বিশ্বাসঘাতক)।
  • উত্তরসূরী: কুরুলুস ওসমান সিরিজ। (আর্তুগ্রুলের ছেলে, তুর্কি সাম্রাজ্যের (সর্বশেষ মুসলিম খেলাফত) প্রতিষ্ঠাতা ওসমান গাজীকে নিয়ে নির্মিত)

চরিত্র বিশ্লেষণ:

  • আর্তুগ্রুল - প্রধান চরিত্র। তার জেদ ও আত্ববিশ্বাস নজরকাড়া।
  • হাইমে মা- তাকে আমার সবথেকে ভাল লেগেছে। তিনি আর্তুগুলের মা, পরামর্শদাতা এবং একজন দক্ষ শাসকের চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন।
  • আর্তুক বে- আরও বেশি ভাল লাগে। একজন সাদা দাড়িওয়ালা গুপ্তচর, পরামর্শদাতা ও দক্ষ ডাক্তারকে তুলে ধরেন তিনি। সমাজে একজন ডাক্তারের গুরুত্ব কতটুকু - তা বোঝা যায় তাঁকে দেখে। (সাদা দাড়িওয়ালা - একটি মুসলিম গুপ্তচর সংস্থা, যার কাজ ছিল মুসলিম খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা)
  • ইবনে আরাবী - একজন সাদা দিলওয়ালা মানুষ হিসেবে ভাল লেগেছে। তাঁর উপদেশ ও খোদাভীরু দরবেশী জীবন চোখে লাগার মত। তবে তার থেকে ওসমান সিরিজের “এদেব আলী”কে ভাল লেগেছে। তিনি ঘুরে বেড়ান না বরং সমাজে পরিশ্রম করে জীবীকা নির্বাহ করেন এবং মানুষকে সত্যের পথে ডাকেন।
  • বামসী - হাস্যরসাত্বক চরিত্র হিসেবে বামসী সিরিজে প্রাণ সঞ্চার করেছে।
  • তুরগুত - একশনের জন্য তুরগুত আর তার কুড়ালের তুলনা হয় না।
  • সেলজান - চক্রান্ত ও কূটচালের জন্য সেলজান অতুলনীয়। প্রথমে সে খারাপ খাকে, পরে তার সব চাল ভাল কাজে লাগায়।

(আরও অসংখ্য চরিত্র রয়েছে)

 

সবথেকে দুঃখের দৃশ্য:

 সুলেমান শাহের মৃত্যু, দোগানের মৃত্যু।

ভাল লাগার বিষয়:

কোনো একটি দুর্গ জয়ের পর সেখানকার সংখ্যলঘুদের সাথে সুন্দর ব্যবহার, সবার সমান ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদি অনেক ভাল লেগেছে। সিরিজের সব ক্ষেত্রে মুহাম্মাদ (স) নাম শুনার পর সবার নত হয়ে যাওয়া ও বুকে হাত রেখে সম্মান দেখানো সবথেকে ভাল লেগেছে। সুন্দর একটি সমাজের চিত্র এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর দৃঢ় মনোবল ভাল লাগার অন্যতম বিষয়। চারবন্ধুর (এরতুরুল, বামসী, দোগান, তুরগুত) একসাথে শপথগ্রহন ও রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন সিরিজের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়।

 

সমালোচনা:

সিরিজ দেখতে গিয়ে আমাদের ৩০০ ঘন্টা (১৫০ পর্ব) সময় ব্যয় হয়েছে। এ সময়টা দিয়ে অনেক কাজ করা যেত। অতিরিক্ত সময় এক জায়গায় বসে খেকে মাথা বসে যেত। যেটি শারীরিক সুস্থতার জন্য খু্বই ক্ষতিকর।

ফেসবুকে সিরিজ সম্পর্কিত কিছু গ্রুপে এড হয়েছিলাম। গ্রুপগুলোতে অনেকে এই ঐতিহাসিক সিরিজকে শুধুমাত্র ধর্মীয় সিরিজ হিসেবে মনে করেন এবং আমাদের দেশের ধর্মীয় বিভিন্ন ঝামেলাপূর্ণ বিষয়ের সাথে সিরিজকে মিলিয়ে ফেলেন। তাছাড়া উগ্র চিন্তাভাবনা যারা পোষণ করেন, তারা এই সিরিজকে তাদের মেনিফেস্টো হিসেবে ব্যবহার করেন। যদিও এর জন্য সিরিজ দায়ী নয়।

 

পরামর্শ:

যারা বিভিন্ন খারাপ ভিডিও, হিন্দি মুভি দেখে থাকেন - তারা এই সিরিজ দেখলে নিজেকে এগুলো থেকে দূরে রাখতে পারবেন সহজে। নিজের মধ্যে দায়িত্ববোধ, আত্ববিশ্বাস তৈরী হবে।

আর যারা কোনো ধরণের মুভি/নাটক দেখেন না - তারা পুরো সিরিজ না দেখার পরামর্শ। কারণ, এটা অনেক সময় নষ্ট করে ফেলবে। দুএকটা পর্ব দেখতে পারেন অভিজ্ঞতার জন্য।

 

(আমার এ অভিজ্ঞতার সাথে অনেকের অভিজ্ঞতার মিল নাও থাকতে পারে। সবার মতকে সম্মান জানাই)

______________________

আমার আর্তুগ্রুল সিরিজ দেখার অভিজ্ঞতা:

আমি ছোটবেলায় বিটিভির ছবি দেখতাম। বয়স হওয়ার পর বাংলা ছবির প্রতি আগ্রহ উঠে যায়। কারণ, প্রায় প্রত্যেক ছবির কাহিনীর বিষয় ছিল প্রেমঘটিত সমস্যা। নায়ক নায়িকারা সমাজের/পরিবারের সাধারণ নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে সংগ্রাম করে প্রেম করেন এবং পরিবারকে অমান্য করে একসময় বিয়ে করেন। তবে বিষয় হচ্ছে, সমাজের এরকম ঘটনা খুবই কম ঘটে এবং বেশিরভাগ বিয়েই পরিবারের সম্মতিতে হয়ে থাকে। চলচিত্রকে যদি সমাজের দর্পণ হিসেবে ধরা হয়, তাহলে এসব ছবি সমাজের কোনো প্রতিনিধিত্ব করে না বরং সমাজের বাস্তব চিত্রকে বিপরীতভাবে উপস্থাপন করে।

তবে বাংলা চলচিত্রগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবিগুলো সমাজকে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করে (বিশেষ করে ষাট-নব্বই এর দশকের)। তাছাড়া কিংবদন্তী লেখক, নাট্যকার হুমায়ুন আহমদ নির্মিত ছবি/নাটকগুলো খুবই সুন্দরভাবে সমাজকে তুলে ধরে। এগুলো দেখে আর কিছুই দেখার পাই নি। নতুন বাংলা যে ছবিগুলো তৈরী হচ্ছে সেগুলোতে কাহিনী/বাস্তবতা থেকে অশ্লীলতার পরিমাণ বেশি। তাই এগুলো দেখিনি কখনো।

ইংলিশ ওয়ার মুভি (যুদ্দের মুভি) ও এনিমেল মুভি (জঙ্গলের জীবন) দেখতাম, সুন্দর লাগত।

তবে ইচ্ছা ছিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে কিছু দেখব। হুমায়ুন আহমদের নাটকগুলো দেখা হয়ে গিয়েছিল। আর সবসময় একটা চিন্তা ছিল, বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের সংস্কৃতি/আদর্শ নিয়ে মুভি তৈরী হয়, কিন্তু মুসলিমদের ধর্মীয় আদর্শ/সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে কোনো মুভি নেই কেন!

**

একবার ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে কিছু মুভির ক্লিপ সামনে আসে। নতুন একটি ভাষায় ভিডিও, তাই আর খেয়াল করিনি। বারবার এগুলো সামনে আসায় একসময় মনযোগ দিয়ে দেখলাম। অনেক ভাল লাগল। শুনলাম এগুলো তুর্কি সিরিজের ক্লিপ। একশন দেখে খুব আগ্রহ হল। সার্চ দিয়ে বের করলাম “কুরুলুস উসমান”। ৫ নং ভলিউম (পর্ব) থেকে দেখা শুরু করলাম। আশ্চর্য হলাম, পুরো পর্বে সামান্যতম কোনো অশ্লীল দৃশ্য নেই। বাংলা সিনেমায় যে অন্তরঙ্গ সিনগুলোকে অশ্লীল বিবেচনা করা হয় না, সেগুলোও নেই। খুবই ভাল লাগল। তাছাড়া চরিত্রগুলোর ধর্মীয় দায়িত্ববোধ ও মূল্যবোধ খুব সুন্দর মনে হল। রমজান ২০২১ - এ ৫০ টির বেশি পর্ব দেখে ফেললাম। তবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার সুযোগ হল না, যেহেতু এটা তুর্কি ভাষায় ছিল এবং আমি ইংরেজী সাবটাইটেল দেখতাম। অনেক নতুন নতুন ইংরেজী শব্দ শিখা হল।

 

পরে শুনলাম উসমানের বাবা আর্তুগ্রুলকে (এরতুরুল) নিয়ে আরেকটি সিরিজ আছে এবং সেটির বাংলা ডাবিং আছে। ড. জাকির নায়েক স্যারের এক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে এটা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন করা হয়। তখন এটি দেখার জন্য আগ্রহ হল।

**

পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাংলা দিরিলিস আর্তুগ্রুল দেখা শুরু করলাম। যেহেতু মোটেও অশ্লীলতা ছিল না এবং সুন্দর একশন ছিল এবং মুসলিম জীবনযাপন ও সংস্কৃতির উপস্থিতি ছিল, তাই সবাই আগ্রহ নিয়ে দেখতে লাগল। আম্মা প্রথমে “রাজা বাদশার কাহিনী” বলে দেখতেন না। যখন কাহিনী বুঝে ফেললেন, তখন প্রতিদিন নতুন পর্ব আনতে বলতেন।

করোনার জন্য প্রায় ১.৫ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। জীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল। তখন আর্তুগুল দেখে দেখে সময় যাচ্ছিল সবার।

বাংলা ডাবিং এর পর্বগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার পর সাবটাইটেল দেখে দেখে সব পর্ব শেষ করি। আম্মা পড়তে না পারলেও আন্দাজ করে বুঝেছেন কাহিনী।

___

আর্তুগ্রুল শেষ পর্বের হাইলাইটস দেখুন এখানে..

______

Saiful Munna.

Comment Here:

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post